
আনোয়ার হোসেন (বিশেষ প্রতিনিধি)-
গাজীপুর শ্রীপুরের অন্তর্গত কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন নামক এলাকায় প্রায় ৩৫০ বিঘা জমি সহ বুজুর আলী ঢালী ওয়াকফ স্টেট”-এর শতশত বিঘা জমি বেদখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে! সেই সাথে বৈধ ওয়ারিশানদের জমিজমা জবরদখলের মাধ্যমে তাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে! শুধু তাই নয় – মসজিদের মতো একটি পবিত্রতম এবাদতের স্থান নির্মানে স্টেটের জায়গার বদলে অন্যের জমি জবরদখলের মাধ্যমে কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে! এলাকাবাসীরা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা মামলা হামলার শিকার হতে হয়েছে বিভিন্ন সময়! তাই সেবামূলক কার্যক্রমের মহৎ ব্রতে গড়ে ওঠা ওয়াকফ স্টেটকে – দখলবাজদের কবল থেকে পুনরুদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় এলাকার বাসিন্দারা। তারই অংশ হিসাবে শুক্রবার সকাল ১২ টায় স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন রাস্তায় জড়ো হয়ে- সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, প্রশাসন সহ বিভিন্ন মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ ও কার্য্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে -শতশত এলাকাবাসী ! নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বর্তমানে এর কয়েকশত বিঘা জমি অবৈধ দখলের কবলে ! সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটিকে দখলদারদের কবল থেকে রক্ষা করার আহবান জানান মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছাত্র শিক্ষক, কৃষক মজুর, চাকরি জীবী, ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ, গৃহিণী সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সোলেমান(৫৫) মাইজুদ্দিন (৬০) মোফাজ্জল ঢালী (৪৩) আফতাব উদ্দিন (৭৫) হামিদ শেখ(৭০) মিরাজ ঢালি (৫৫) সুজন ঢালী(৩০) এবং আঃ আউয়াল (৮৫)! আঃ আওয়াল বলেন মসজিদের ৮ বিঘা জমি বিক্রি করে দিয়ে এখন অন্যের জমিতে মসজিদ নির্মাণ করছে! তিনি প্রশ্ন করে বলেন- মোতয়ালী হয়ে জমি বিক্রি করলো? শতশত বিঘা জমি বিক্রির অনুমোদন তারা কোথায় পেলো? তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন!
এলাকাবাসীর বক্তব্যে দখলবাজদের মধ্যে যাদের নামে অভিযোগ ওঠেছে তারা হলেন-
১# ফেরদৌস মিয়া (৭৫) পিতা- মৃত তৈয়ব আলী ২# হাবিজুদ্দিন (৬৫) পিতা- মাইজুদ্দিন মেম্বার ৩# শামসুদ্দিন (৬০) পিতা- ঐ ৪# হালিম (৫০) পিতা- ঐ ৫# কামাল হায়দার (৪৭) পিতা – ঐ, সর্বসাং নান্দিয়া সাঙ্গুন! ৬# ওয়াহিদুর রহমান(৭০) পিতা – মৃত আমজাদ আলী! এরা সকলেই ক্রয়সূত্রে জমির মালিক হওয়ার দাবী করলেও সাধারণ মানুষ তা মানতে নারাজ! কারণ ওয়াকফ স্টেটের শতশত বিঘা জমি বিক্রি করার কোনো আইনগত অধিকার বা কোনো অনুমোদন কেউ দেখাতে পারবেনা বলে দাবী করেন এলাকাবাসী!
অপরদিকে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি সহ প্রতিবাদী অবস্থান সত্বেও বিতর্কিত জায়গায় অবস্থিত মসজিদটি উদ্বোধন করতে আসেন কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আঃ আজিজ এবং শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ! এসময় মসজিদের পাশেই চেয়ারম্যান আঃ আজিজের সম্মুখে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে, এসময় চেয়ারম্যান তাদের ব্যানার সহ সকল প্লেকার্ড নামিয়ে ফেলতে বলেন! আগামী বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন পরিষদ কার্য্যালয়ে যেতে বলেন এবং ন্যায় বিচার করা হবে বলে আস্বস্ত করেন বিক্ষুব্ধ জনতাকে! এসময় শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মসজিদের ভেতরে অবস্থান করেন! তিনি বলেন এসব কোনো বিষয় সম্পর্কে আমার জানা নেই, আমাকে নামাজের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে তাই নামাজ পড়েই চলে যাবো! এ সময় অভিযুক্তদের অনেককেই মসজিদের ভেতরে অবস্থান করতে দেখা গেছে!
বুজুর আলী ঢালী ওয়াকফ স্টেটের বেদখল সম্পত্তি উদ্ধারে এলাকার জনগন লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন বলে জানান! এ এলাকার সচেতন জনগন দীর্ঘদিন থেকেই এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসার কথা জানা যায়! বিগত সময়ে অর্থাৎ ফখরুদ্দীন সরকার আমলে সেনাবাহিনী প্রধানের নিকটও স্টেটের জমি উদ্ধারের আবেদন করা হয়েছিলো কিন্তু কি এক দুর্বোধ্য কারনে তারা বিষয়টা এড়িয়ে গেছেন।

