সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন [gtranslate]
Headline
আলহামদুলিল্লাহ শেরপুরে প্রণোদনার ভাগ না পেয়ে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে পেটালেন ছাত্রদল নেতা! ঝিনাইগাতীতে ২৭১০ কৃষকের মাঝে সরকারি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ গাজীপুরে বনদস্যুদের হামলায় তিন সাংবাদিক আহত, অভিযুক্ত সেচ্ছাসেবকদল নেতাসহ আটক-৩ নালিতাবাড়ীতে মসজিদে নেশাগ্রস্তদের হামলা ও ভাংচুর: ইমামসহ মুসল্লি আহত,থানায় অভিযোগ কাপাসিয়ায় জামায়াতের উদ্যোগে ৯ গরীব ও অস্বচ্ছ পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ গাজীপুর-১ আসনে ধানের শীষের প্রচারণায় ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী গাজীপুরে হা-মীম গ্রুপের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলনের গাজীপুর আদালতে ৩ সম্পাদকসহ ৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে  মানহানি “মিথ্যা” মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কালীগঞ্জে ভূয়া সিআইডি পরিচয়ে অপহরণ- গ্রেফতার ২
Headline
Wellcome to our website...
বনভূমি রক্ষা করার পাশাপাশি ঠেকাতে হবে মানবিক বিপর্যয়
/ ১৭১ Time View
Update : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
বনভূমি রক্ষা করার পাশাপাশি মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করতে হবে।
ফরিদ আলম সৌরভ,
ফিচার রাইটার ও কলামিস্ট, গাজীপুর।
বনাঞ্চল রক্ষা বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে থাকা এই দেশে বনাঞ্চলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে, বন সংরক্ষণের নামে পরিচালিত কিছু কার্যক্রম মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলছে। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুরের বেশ কিছু এলাকায় বন বিভাগের জায়গায় বসবাসরত অসহায় পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার ঘটনা শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়, এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতির উপরও একটি বড় আঘাত।
উচ্ছেদের ফলে ঘরবাড়ি হারিয়ে শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য পরিবার। মা-বাবার অসহায়ত্ব এবং শিশুদের চোখে ভয়ের ছাপ দেখলে বোঝা যায়, এই উচ্ছেদ কেবলই একটি প্রশাসনিক কার্যক্রম নয়, বরং এটি সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক নিষ্ঠুর অবস্থা। শিশুদের উপর এর যে মানসিক প্রভাব পড়ছে, তা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের উপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রশ্ন জাগে—এই বসতভিটা ও স্থাপনাগুলো কীভাবে বন বিভাগের জায়গায় তৈরি হলো? যারা এই জায়গা দখল করেছে, তারা কি হঠাৎ করেই এখানে এসেছে? নাকি বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে এইসব স্থাপনা গড়ে উঠেছে? বাস্তবতা হলো, বন ভূমি রক্ষার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু অসাধু কর্মকর্তা বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই সমস্যা তৈরি করেছেন। তবুও, উচ্ছেদের নামে শুধুমাত্র দরিদ্র পরিবারগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে, অথচ এর পেছনের মূল চক্র থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়া বন ভূমি দখল সংক্রান্ত সঠিক তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিককে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। গাছ কাটার মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করার ঘটনা আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতাই প্রমাণ করে।
এই সংকটের সমাধান কেবল উচ্ছেদ দিয়ে সম্ভব নয়। বরং প্রয়োজন সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার। উচ্ছেদের আগে পরিবারগুলোর পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। তদন্তের মাধ্যমে বন ভূমি দখলের পেছনে কারা দায়ী, তা উদ্ঘাটন করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বন বিভাগের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে এ সমস্যার মূল উৎপাটন করা জরুরি।
একটি মানবিক ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের প্রধান কাজ তার নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা। বনাঞ্চল সংরক্ষণ অবশ্যই জরুরি, কিন্তু এর জন্য অসহায় পরিবারগুলোর জীবন ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।
উচ্ছেদ কার্যক্রমের আগে দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য পুনর্বাসন, বিকল্প আবাসন এবং তাদের জীবিকার উপায় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে বন ভূমি রক্ষা ও জনকল্যাণের মধ্যে ভারসাম্য আনতে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি স্বচ্ছ ও মানবিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নই পারে এই সংকট সমাধান করতে।
আমাদের সমাজের প্রতি এটাই অনুরোধ, যেন আমরা এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই। রাষ্ট্রকেও এটি মনে রাখতে হবে যে, উন্নয়ন তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সম্পন্ন হয়। অন্যথায়, বন রক্ষার নামে যে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে, তা পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যকেই ব্যর্থ করে দেবে।
আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page